বাংলার মনীষী দের হাস্য কৌতুক
- স্বামী বিবেকানন্দের কৌতুক ---পুরুষের সন্তান প্রসব
একবার স্বামী বিবেকানন্দ আমেরিকায় গিয়েছিলেন বিশ্ব মহা সম্মেলনে যোগ দিতে ।আমেরিকানরা ভারতীয় দের পছন্দ করতো
না ।তারা ভারতীয় দের কুসংস্করাচ্ছন্ন মনে করতো ।একদিন এক বিদেশি স্বামীজী র সাথে আলাপ করছিলেন ।কথা প্রসঙ্গে বিদেশি টি স্বামীজিকে জিজ্ঞাসা করলেন ,"আচ্ছা স্বামীজী শুনেছি ভারতবর্ষে নাকি শিশু জন্মালেই তাকে গঙ্গার জলে ফেলে দেওয়া হয়?"বিদেশির মুখে এরকম অপমান জনক প্রশ্ন শুনে স্বামীজীর মাথা গরম হয়ে গেল ।তবুও তিনি রাগ control করে ঠোঁটে হাসি নিয়ে বললেন ,"কিন্তূ আমি বেঁচে গেছি ।"বিদেশিটি
আবার বোকার মত প্রশ্ন করলেন ,"স্বামীজী আপনাদের দেশে কন্যা সন্তান জন্মালেই নাকি তাকে কুমিরের মুখে ছুড়ে ফেলা হয় ?"এবার স্বামীজী আরও রেগে গেলেন ।তবু তা প্রকাশ না করে বিদেশিকে
বললেন ,"আপনি ঠিকই শুনেছেন সেই জন্যই তো আজকাল ভারতবর্ষে পুরুষরা সন্তান প্রসব করছে ।"
উচিত জবাব পেয়ে বিদেশি আর বিবেকানন্দের সামনে দারাবার সাহস পেলেন না ।
তুলতেন বন্ধুদের ।
একদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা এসেছিলেন
আবার বোকার মত প্রশ্ন করলেন ,"স্বামীজী আপনাদের দেশে কন্যা সন্তান জন্মালেই নাকি তাকে কুমিরের মুখে ছুড়ে ফেলা হয় ?"এবার স্বামীজী আরও রেগে গেলেন ।তবু তা প্রকাশ না করে বিদেশিকে
বললেন ,"আপনি ঠিকই শুনেছেন সেই জন্যই তো আজকাল ভারতবর্ষে পুরুষরা সন্তান প্রসব করছে ।"
উচিত জবাব পেয়ে বিদেশি আর বিবেকানন্দের সামনে দারাবার সাহস পেলেন না ।
রজনীকান্ত সেনের কৌতুক----পঞ্চম পুত্রের নাম
রজনীকান্ত সেন একবার তার উকিল বন্ধুর নামকরণ নিয়ে মজার গল্প শুনেছিলেন ।সেটা ছিল -এক পন্ডিত মশাইয়ের কাছে এক ভদ্রলোক এলেন ।তিনি পুত্রের নামকরণ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ।তিনি পন্ডিত মশাই কে বললেন ,"আমার প্রথম পুত্রের নাম জগৎপতি ,দ্বিতীয় পুত্রের নাম লক্ষীপতি ,তৃতীয় পুত্রের নাম শচীপতি ,চতুর্থ পুত্রের নাম ধরাপতি ।আমার আবার পুত্র হয়েছে ।আমার আবার পুত্র হয়েছে ।আপনি বলুন এই পঞ্চম পুত্রের নাম কি রাখা যায় ?"পন্ডিত মশাই গম্ভীর হয়ে বললেন ,চিন্তা কিসের ?এই ছেলের নাম রাখুন ভগ্নিপতি ।"এরকম মজার গল্প বলে রজনীকান্ত হাসিয়াতুলতেন বন্ধুদের ।
শরৎচন্দ্রের কৌতুক -পাদুকা পুরান
একদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা এসেছিলেন
শরৎচন্দ্র ।ঘরে ঢুকে শরৎচন্দ্র দেখলেন রবীন্দ্রনাথ জনাকয়েক
বন্ধুবান্ধবের সাথে ফরাসে বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন ।শরৎচন্দ্র
ঘরে ঢুকে রবীন্দ্রনাথকে প্রণাম করলেন ।রবীন্দ্রনাথ দেখলেন ,
শরৎচন্দ্রের হাতে কাগজে মোড়া কিছু একটা ।রবীন্দ্রনাথ
শরৎচন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করলেন ,"ওহে শরৎ,তোমার হাতে ওটা কী ?"শরৎচন্দ্র হেসে বললেন ,"গুরুদেব
দাদাঠাকুর শরৎচন্দ্র পন্ডিতের রসিকতা --পেটের মধ্যে রায়োট
দাদাঠাকুর শরৎচন্দ্র পন্ডিত ছিলেন সাদামাটা জীবন যাপনের সমর্থক ।তিনি আরম্বর পছন্দ করতেন না ।তিনি বড়োলোকের বাড়ির নিমন্ত্রণকে প্রাণহীন মনে করতেন।একবার তিনি এক বড়োলোকের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেয়ে পরের দিন সকালে ছাপাখানাতে পত্রিকার কাজ করতে এলেন ।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য তিনি 'বিদূষক 'পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন ।পত্রিকার কাজ করতে করতে ঢেকুর তুলে নলিনীকান্ত সরকারকে বললেন ,'ওহে
নলিনী,একটু তামাক সাজ দেখি ,শরীরটা ভালো নেই ।'নলিনী
জানতে চাইলেন ,'কেন কি হলো ?'দাদাঠাকুর বললেন ,'বুঝলে না ,কালকের ওই ব্রাহ্মন ভোজনের জের ,
সারারাত পেট্রিয়ট হয়ে ছটফট করেছি বিছানায় পড়ে ।'নলিনী অবাক হয়ে জানতে চাইলেন ?পেট্রিয়ট হয়ে ।সেটা কি ?দাদাঠাকুর শরৎচন্দ্র উত্তর দিলেন পেটের মধ্যে রায়ট বাধে বলেই তো লোকে
সারারাত পেট্রিয়ট হয়ে ছটফট করেছি বিছানায় পড়ে ।'নলিনী অবাক হয়ে জানতে চাইলেন ?পেট্রিয়ট হয়ে ।সেটা কি ?দাদাঠাকুর শরৎচন্দ্র উত্তর দিলেন পেটের মধ্যে রায়ট বাধে বলেই তো লোকে
পেট্রিয়ট হয় ।গরীবের পেটের বাসিন্দা হলো ডাল ,ভাত ,চ চ্চরি ।আর লুচি ,মাংস ,পোলাও ,মিষ্টি এসব পেটের মধ্যে ঢুকে পড়ায় ,সেই সব অপরিচিত দের দেখে ডাল ,ভাত who are you ,who are you বলে
চিৎকার করে রায়ট বাধিয়ে দিল । সারারাত পেটের মধ্যে কী হট্টগোল ।আমি তো খুব কষ্ট পেয়েছি ।তোমার কাছে যখন এলাম ডেকুরের মধ্যে দিয়ে 'who are you'বলে আবার হাঁক ছাড়ল ।শুনতে পেলে না ?একথা শুনে নলিনীকান্ত হেসে উঠলেন ।
চিৎকার করে রায়ট বাধিয়ে দিল । সারারাত পেটের মধ্যে কী হট্টগোল ।আমি তো খুব কষ্ট পেয়েছি ।তোমার কাছে যখন এলাম ডেকুরের মধ্যে দিয়ে 'who are you'বলে আবার হাঁক ছাড়ল ।শুনতে পেলে না ?একথা শুনে নলিনীকান্ত হেসে উঠলেন ।
।। ম নী ষী -- কৌ তু কী ।।
ReplyDelete_________________________
শিবনাথ শাস্ত্রী
পন্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী ছাত্রদের পড়াচ্ছেন। স্কুলে ড্রাম ভর্তি রসগোল্লা এসেছে। কখন শাস্ত্রী সাহেব বললেন, ”এই ড্রামের সব রসগোল্লা তোমাদের মধ্যে কে সাবাড় করতে পারবে?” তখন সবাই একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলো। হঠাৎ একজন শিক্ষার্থী চিৎকার করে বলল, ” স্যার, আমি পারব।” পরমুহূর্তেই চাপাস্বরে বলল, “তবে একদিনে নয়।” সেদিনের সেই ছাত্রটির নাম ছড়াকার সুকুমার রায়।
_________________________
রবিঠাকুর
শান্তিনিকেতনে রবিঠাকুর ছাত্র পড়াচ্ছেন। ক্লাসের বাইরে একটা ছাত্র হাতে 'নিমের ডাল' নিয়ে আপন মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তখন কবি তাকে ‘নিমাই’ সম্বোধনে ডাকলেন। এই কথা ক্লাসের উপস্থিত ছাত্ররা শুনলো। একজন শিক্ষার্থী উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ” গুরুদেব, কাল থেকে আমি যদি 'জাম গাছের' ডাল নিয়ে ক্লাসের বাইরে ঘুরে বেড়াই আমাকে কি বলে ডাকবেন?” তখন রবিঠাকুর তাকে বললেন, ”তখন তোমাকে আর ডাকা চলবে না বাপু”। সেদিনের সেই প্রত্যুৎপন্নমতি ছাত্রটিই প্রমথনাথ বিশী।
_________________________
বিদ্যাসাগর
কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন দারুণ অর্থকষ্টে ভুগছিলেন তখন বিদ্যাসাগর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। একদিন এক মাতাল বিদ্যাসাগরের কাছে এসে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। বিদ্যাসাগরের সাফ সাফ জওয়াব তিনি কোন মাতালকে সাহায্য করবে রাজি নন। তখন ঐ মাতাল জানালো যে বিদ্যাসাগর তো মধুসূদনকে সাহায্য করেন ! কিন্তু মধুসূদনও তো মদ খান । তখন বিদ্যাসাগরের জবাব ছিল এমন, ”তুমি ওর মতো ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য লিখে আনো। তোমাকেও সাহায্য করব।”
_________________________
স্বামী বিবেকানন্দ
গোরক্ষিণী সভার সভাপতি গিরধারী লালের সাথে একবার স্বামী বিবেকানন্দের দেখা হলে স্বামীজী কৌতূহলী হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেন,” আপনাদের সভার উদ্দেশ্য কী?” তিনি জানালেন গো- মাতাদের রক্ষা করাই তাদের ধর্ম। তখন স্বামীজি বললেন, ” আর মানুষ অনাহারে মরে গেলে তার মুখে অন্ন তুলে দেওয়া বুঝি আপনাদের ধর্ম নয়?”। তখন সভাপতি গিরধারী বললেন, ”কিন্তু শাস্ত্রে আছে গাভী তো আমাদের মাতা।” তখন বিবেকানন্দ ধমকের সুরে বললেন, ”গাভী যে আপনাদের মাতা তা বেশ বুঝতে পারছি। তা না হলে এমন সব ছেলে জন্মাবে কেন?”
_________________________
বঙ্কিমচন্দ্র
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরির জন্য বঙ্কিমচন্দ্রকে ভাইভা দিতে হল। তাঁকেও যথারীতি বাংলার উপরে পরীক্ষা দিতে হল তবে সেখানে পরীক্ষক একজন জাত ইংরেজ। প্রথমেই তিনি বঙ্কিমকে প্রশ্ন করলেন, “ওয়েল! বলতে পারো, হোয়াট দ্য ডিফারেন্স বিটুইন বিপড অ্যান্ড আপড?” বঙ্কিম বাবু হেসে বলেছিলেন,” অবশ্যই, একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলছি। পদ্মায় একবার স্টিমারে করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ শুরু হল ঝড়। সেটা হল বিপদ। আর এই যে আজ আমাকে একজন বাঙালি হয়ে তোমার মত ইংরেজের কাছে বাংলা ভাষার পরীক্ষা দিতে হচ্ছে- এটা আপদ।”
_________________________
শরৎচন্দ্র
শরৎবাবুর কাছে দুজন ব্যক্তি এসেছেন। তারা শরৎচন্দ্রের লেখার ভূয়সী প্রশংসা করলেন আর রবীন্দ্রনাথের লেখার সমালোচনা করলেন কারণ তা নাকি দুর্বোধ্য। তখন শরৎ বাবু বললেন, “আমি লিখি আপনাদের জন্য। আর রবিবাবু লেখেন আমাদের জন্য।"
_________________________
রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কাছে ধর্মসভায় হেরে গিয়ে এক সাধু রাগ করে বললেন, ” আমি ত্রিশ বছর সাধনা করে এখন হেঁটে নদী পার হতে পারি। আপনি কী পারেন?” তখন রামকৃষ্ণ একটু হেসে বললেন, ” যেখানে এক পয়সা দিলেই মাঝি আমাকে নদী পার করে দেয় সেখানে এর জন্য ত্রিশ বছর নষ্ট করার পক্ষপাতী আমি নই।”
_______________________